“This is so much better than anything else!” আট বছর বয়সী এলিস নিউটনের কথায় মেয়ের হাতের পান্ডুলিপির দিকে দেখলেন লন্ডনের ব্লুমসবেরি প্রকাশনীর চেয়ারম্যান ব্যারি ক্যানিংহ্যাম। জোয়ান রাউলিং নামের একজন দরিদ্র মহিলা কোনো এক আকাশ কুসুম গল্প নিয়ে লেখা পান্ডুলিপিটি দিয়ে গেছেন। এর আগে ১২টি প্রকাশনীতে এই লেখা দেয়া হলেও কেউই তা প্রকাশ করতে রাজি হয়নি। কিন্তু মেয়ের অনুরোধে গল্পটি প্রকাশ করতে রাজি হলেন ক্যানিংহ্যাম। আর রাউলিংকে বললেন ছোটখাটো একটি চাকরি নিতে কারণ বাচ্চাদের জন্য লেখা বই থেকে খুব একটা টাকা পয়সা উপার্জন হবে না। এছাড়া একজন লেখিকার বই কিশোররা না ও পড়তে পারে, এই ভেবে রাউলিং এর নাম বদলিয়ে একটা পেন নেইম রাখতে বললেন। লেখিকা তার নাম হিসেবে পছন্দ করলেন জোয়ান ক্যাথরিন (দাদির নাম) রাউলিং। যে নামটি আজ সারাবিশ্ব চেনে জে. কে. রাউলিং হিসেবে, ইতিহাসে আলোড়ন সৃষ্টিকারী বই ‘হ্যারি পটার’ এর স্রষ্টা, বিশ্বের প্রথম বিলিয়নিয়ার লেখিকা হিসেবে! চলুন জেনে নেয়া যাক, তার শিকড় থেকে শিখরে চড়ার গল্প।
রাউলিং এর শৈশব ও বেড়ে ওঠা
শৈশবটা উইন্টারবোর্ন গ্রামে কাটালেও, জোয়ান রাউলিং এর জন্ম ইংল্যান্ডের গ্লোস্টাশায়ারের ইয়ট শহরে। তিনি ১৯৬৫ সালের ৩১ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন। জোয়ানের বাবা ইঞ্জিনিয়ার জেমস রাউলিং ও মা টেকনিশিয়ান অ্যান রাউলিং। তার মায়ের অসুস্থতার কারণে রাউলিং পরিবারের গল্পটা ধীরে ধীরে ধূসর হতে থাকে। জোয়ানের সাথে তার বাবার সম্পর্কও ভালো ছিল না। এসব সমস্যা থেকে দূরে থাকতে ও কিছুটা শান্তি খুঁজে পাওয়ার জন্য মাঝেমধ্যেই রাউলিং বেছে নিতেন বই পড়া ও ফ্যান্টাসি গল্প তৈরি করার মত কাজ। পরবর্তী জীবনে রাউলিং বলেছিলেন যে তার বয়ঃসন্ধিকালটা মোটেও সুখকর ছিল না।
রাউলিং এর শিক্ষার হাতেখড়ি হয় সেন্ট মাইকেল প্রাইমারি স্কুলে। মাধ্যমিক স্কুল শেষ করেন উইডেন স্কুল এন্ড কলেজ থেকে। ইংরেজি, ফরাসি এবং জার্মান ভাষা নিয়ে ছিল তার তখনকার পড়াশুনা। ১৯৮২ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন করলেও সেখানে সুযোগ না হওয়ায় ভর্তি হন এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৮৬ সালে ফ্রেন্স এবং ক্লাসিকস নিয়ে স্নাতক শেষ করেন। এক্সেটারের জার্নালে কিছুদিন লেখালেখির পর রাউলিং লন্ডনের অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালে গবেষক ও দোভাষী সেক্রেটারি হিসেবে চাকরি নেন। ১৯৯১ সালের দিকে রাউলিং শিক্ষকতা করতে পর্তুগালের পোর্তোতে চলে যান। তিনি তখন রাতে পড়াতেন আর দিনে ভায়োলিন কনসার্ট শুনতে শুনতে লেখালেখি করে সময় পার করতেন। পোর্তোতে আসার ১৮ মাস পরে রাউলিং জর্জ আরান্তেস নামক একজন পর্তুগীজ টেলিভিশন সাংবাদিক এর সাথে পরিচিত হন। ১৯৯২ সালে তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলেও এক বছরের মধ্যেই তা ভেঙ্গে যায়। এর মধ্যেই রাউলিং এর প্রথম সন্তান জেসিকা ইসাবেল রাউলিং এর জন্ম হয়। প্রথম বিয়ে ভেঙ্গে যাওয়ার পর সিঙ্গেল মাদার হিসেবে দীর্ঘদিন কাটান রাউলিং। এরপর ২০০১ সালে তিনি নিল মুরে নামক একজন স্কটিশ ডাক্তারকে বিয়ে করেন।
ব্যর্থতা থেকে হতাশার প্রবল গ্রাসে
রাউলিং যখন খুব ছোট তখন তার মা স্নায়ুতন্ত্রের জটিল রোগে আক্রান্ত হন। এছাড়া বাবার সাথেও তার সম্পর্ক খুব একটা ভালো ছিল না। ছোটবেলা থেকেই এসব কারণে তার জীবন বিষাদময় ছিল। পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ না পাওয়ার কারণে আরো হতাশা ভর করে রাউলিং এর জীবনে। এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করলেও, তার সাত বছরের বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষে নিজেকে একজন ব্যর্থ মানুষ হিসেবে আবিষ্কার করেন। ছিল না ভালো ভাবে চলার মতো কোনো চাকরি বা অর্থোপার্জনের ভালো কোনো উপায়।
১৯৯০ সালে রাউলিং এর জীবনে ঘটে যায় আরও একটি দূর্ঘটনা। তার মা দশ বছর অসুস্থ থেকে মৃত্যুবরণ করেন। রাউলিং এ ঘটনায় একেবারেই ভেঙ্গে পড়েন। প্রথম বিয়ের পর তা ভাঙ্গার কারণ হিসেবে উঠে আসে স্বামীর দ্বারা গৃহ নির্যাতন। এমন ভয়াবহ অবস্থার মধ্য দিয়ে চলতে থাকে রাউলিং এর জীবন। এর মধ্যেই তিনি যে ছোটখাটো চাকরি করছিলেন তাও হারান। দীর্ঘ সময় পড়াশোনা করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভালোভাবে গ্র্যাজুয়েশনের পরও বেকারত্বের কারণে রাউলিং হতাশ হয়ে পড়েন। বেকার অবস্থায় সিঙ্গেল মাদার হিসেবে সন্তান নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েন তিনি। মা হারানো, বিবাহ বিচ্ছেদ, নির্যাতন, চরম বেকারত্ব, সিঙ্গেল প্যারেন্টিং সব মিলিয়ে তিনি জীবনের সবচেয়ে প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন। ঐ সময়ে রাউলিং ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশনে পড়ে যান এবং আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নেন। যাই হোক, এরপরে বিভিন্ন থেরাপি ও চিকিৎসার পরে তিনি এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন। পরবর্তী জীবনে রাউলিং সাংবাদিকদের নিজের অতীত সময়ের বর্ণনা দেন এভাবে, “Poor as it is possible to be in modern Britain, without being homeless.”
হ্যারি পটার বুক সিরিজের সূচনা
জাদুজগতের কাহিনী নিয়ে লিখিত হ্যারি পটার বুক সিরিজ রাউলিং এর এক যুগান্তকারী সৃষ্টি। ১৯৯০ সালে ম্যানচেস্টার থেকে লন্ডন যাওয়ার সময় রেলস্টেশনে বসে এই বুক সিরিজের প্লটটি প্রথম তার মাথায় আসে। রাউলিং ১৯৯৫ সালে ‘Harry Potter and the Philosophers Stone’ বইটির পান্ডুলিপি লেখা শেষ করেন। অর্থের অভাবে তার পুরনো ম্যানুয়াল টাইপ রাইটার দিয়েই তিনি পান্ডুলিপিটি টাইপ করেন। ১২ টি প্রকাশনীর দ্বারে দ্বারে ঘুরলেও কেউ তার লেখা ছাপতে রাজি হয়নি। অবশেষে লন্ডনের ব্লুমসবেরী প্রকাশনীর চেয়ারম্যান ক্যানিংহ্যাম তাঁর ছোট মেয়ের অনুরোধে পান্ডুলিপিটি ছাপতে রাজি হন।
১৯৯০ এর ডিসেম্বরে রাউলিং এর মা মারা যান। যার ফলে রাউলিং কখনোই তার মাকে বইটি সম্পর্কে জানাতে পারেননি। মায়ের মৃত্যু রাউলিং এর মধ্যে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। তার নিজের অভিভাবক হারানোর যন্ত্রনা তিনি বইয়ের প্রধান চরিত্র অভিভাবকহীন হ্যারির মধ্য দিয়ে ফুটিয়ে তুলেন। মা মারা যাওয়ার পর রাউলিং পর্তুগালে গিয়ে লেখালেখি চালিয়ে যান। বিয়ে এবং ডিভোর্সের পর তিনি যখন তার সন্তানসহ এডিনবার্গে চলে আসেন, তার স্যুটকেসে তখনো ছিল বইয়ের তিনটা চ্যাপ্টার। এডিনবার্গে এসে রাউলিং তার লেখা শুরু করেন। রাউলিং মূলত তার একটি ক্যাফেতে বসে লেখালেখি করতেন। পরবর্তীতে ধারণা করা হয়, তার শীতাতপ অনিয়ন্ত্রিত ফ্ল্যাটের ঠান্ডা থেকে বাঁচতে রাউলিং এমনটি করতেন। ২০০৭ সালের মধ্যে রাউলিং তার হ্যারি পটার বুক সিরিজের ৭টি বই এর লেখা সম্পন্ন করেন।
সাফল্যের চূড়ায় যেভাবে
২০০৭ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিন রাউলিংকে এক বছরে সর্বোচ্চ আয় করা লেখিকা হিসেবে ঘোষণা করে! ১৯৯৭ সালে রাউলিং এর হ্যারি পটার সিরিজের প্রথম বই বের হয়। এর পাঁচ মাস পর তিনি লেখিকা হিসেবে তার প্রথম অ্যাওয়ার্ড ‘নেসলে স্মারটিয়েস বুক প্রাইজ’ জিতে নেন। পরের বছর ফেব্রুয়ারিতে এ বইয়ের জন্য জিতে নেন ‘ব্রিটিশ বুক অ্যাওয়ার্ড’। ১৯৯৮ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই বুক সিরিজ প্রকাশের স্বত্ত্ব পাওয়ার জন্য নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। স্কলাস্টিকা কর্পোরেশন এক মিলিয়ন ডলার দিয়ে বইয়ের স্বত্ত্ব কিনে নেয়। অক্টোবরে আমেরিকায় প্রথম হ্যারি পটার প্রকাশিত হয়।
১৯৯৮ এর জুলাইয়ে সিরিজের দ্বিতীয় বই ‘Harry Potter and The Chamber of Secrets’ প্রকাশিত হয়। রাউলিং আবার ‘স্মারটিয়েস প্রাইজ’ জিতেন। ১৯৯৯ এর ডিসেম্বরে তার তৃতীয় বই ‘Harry Potter and The Prisoner of Azkaban’ বের হয়। এই বইটির জন্যও রাউলিং ‘স্মারটিয়েস প্রাইজ’ জিতে নিলে ইতিহাসের প্রথম ব্যক্তি হিসেবে টানা তিনবার এই পুরস্কার পাওয়ার রেকর্ড গড়েন তিনি। অন্যদের পর্যাপ্ত সুযোগ দেওয়ার জন্য রাউলিং আর এই পুরস্কারের জন্য কোনো বই জমা দেননি। এর মধ্যেই ১৯৯৯-২০০০ সালে নিউ ইয়র্ক টাইমসের জরিপে আমেরিকার বেস্ট সেলার ফিকশন বই হিসেবে হ্যারি পটার শীর্ষে থাকে। ২০০০ সালে রাউলিং ‘Author of the year’ হিসেবে ‘British Book Award’ পান। সিরিজের চতুর্থ বই ‘Harry Potter and The Goblet of Fire’ ২০০০ সালের ৮ জুলাই যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে একসাথে প্রকাশিত হলে তা দুই দেশেই সর্বোচ্চ বিক্রির রেকর্ড ভেঙ্গে দেয়। আমেরিকায় প্রথম ৪৮ ঘন্টায় ৩ মিলিয়ন কপি বিক্রি হয় ও যুক্তরাজ্যে প্রথম দিনে প্রায় চার লক্ষ কপি বিক্রি হয় যা এর আগের বইয়ের পুরো বছরের বিক্রির সমান। ‘Harry Potter and The Goblet of Fire’ ও ‘Harry Potter and The Order of Phoenix’ সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখে। ২০০৫ সালে ‘Harry Potter and The Half Blood Prince’ প্রকাশিত হলে এটি আগের সব রেকর্ড ভেঙ্গে দেয়। প্রকাশের প্রথম দিনই ৯০ লক্ষ কপি বিক্রি হয় বইটির।
রাউলিং আবার ‘Author of the Year’ পুরষ্কারে ভূষিত হন। ২০০৭ সালের ২১ শে জুলাই ‘Harry Potter and The Deathly Hallows’ প্রকাশিত হলে এটি সর্বকালের সর্বোচ্চ দ্রুততম বিক্রিত বই হিসেবে রেকর্ড গড়ে। যুক্তরাষ্ট্রে ও যুক্তরাজ্যে প্রথমদিনে এর ১১ মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়। পরবর্তীতে ২০০১-২০১১ সাল পর্যন্ত হ্যারি পটার সিরিজ নিয়ে নিয়ে ৮টি সিনেমা নির্মাণ করা হয়। প্রতিটি সিনেমা বাণিজ্যিকভাবে অত্যন্ত সফল হয়। দর্শকদের মাঝেও হয় জনপ্রিয়। সিনেমাগুলো ‘British Academy Award’ সহ আরো বহু অ্যাওয়ার্ড জিতে নেয়। জে.কে.রাউলিং এর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে সিনেমা গুলো তৈরী হয় যার ফলে তিনি বহু পুরষ্কার ও অর্থ উপার্জন করেন।
এভাবে ২০০৪ সালের মধ্যে রাউলিং লেখক হিসেবে বিশ্বের প্রথম বিলিয়োনিয়ার হন। ফোর্বস ম্যাগাজিন তাকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ধনী মহিলা এন্টারটেইনার এবং পৃথিবীর ১০২৬তম ধনী ব্যক্তি হিসাবে অবহিত করে। জে.কে.রাউলিং তার লেখা ও দাতব্য কাজের জন্য জিতে নেন অনেক পুরষ্কার। BBC তাকে অবহিত করে যুক্তরাজ্যের অন্যতম ক্ষমতাধর নারী হিসেবে।
বর্তমান ও অন্যান্য
হ্যারি পটার সিরিজ ছাড়াও রাউলিং ‘The Casual Vacancy, the Tales of Beedle the Bard’ সহ আরো কিছু জনপ্রিয় বই লেখেন তিনি। বিশ্বজুড়ে Covid-19 পরিস্থিতিতে শিশুদের বিনোদনের কথা চিন্তা করে রাউলিং ‘The Ickabog’ নামক একটি শিশুতোষ বই লিখেছেন। বইটি ২৬ মে থেকে অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে এবং ৪ নভেম্বর, ২০২০ এ পুরোপুরি প্রকাশিত হবে।
রাউলিং তার দাতব্য কাজের জন্য স্মরণীয় ও বরণীয়। তিনি দারিদ্র দূরীকরণে, শিশুদের কল্যাণে, সিংগেল প্যারেন্টদের সহায়তায়, ম্যাল্টিপল স্ক্লেরোসিস নির্মূলের লক্ষ্যে দাতব্য কাজ করে যাচ্ছেন। মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার তিনি বিভিন্ন হাসপাতাল ও দাতব্য প্রতিষ্ঠানে ব্যয় করেন। এডিনবার্গে মায়ের নামে তৈরী করেছেন ক্লিনিক। অসহায় শিশুদের জন্য ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ‘Lumos’ নামের একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান চালু করেন। যা বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ৮ মিলিয়নের বেশি শিশুকে সহযোগিতা করছে।
কম্পিউটারের উৎকর্ষতার যুগে শিশু-কিশোররা যখন বই পড়ার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছিল; তার লেখা বই, পুরো বইয়ের জগতেই যেন এসেছিল ত্রাতা হিসেবে। ৬৫ ভাষায় অনুদিত হওয়া এই বইয়ের সিরিজের রয়েছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ফ্যান্ডম- ‘পটারহেড’। হ্যারি পটার সর্বকালের সবচেয়ে দ্রুততম বিক্রি হওয়া বই। বিশ্বজুড়ে জে. কে. রাউলিং নামটিই যেন এক অনুপ্রেরণা, এক বিশ্বাস। হতাশা ও ব্যর্থতার ঘোরে আত্মহত্যার চেষ্টা করা মানুষটি যখন সাফল্যের এমন চূড়ায় উঠে, তখন আপনি-আমি কেন পিছিয়ে থাকব?
Feature Image Courtesy: facebook.com/JKRowling