ফ্রেম টু ফ্রেম নকল করে সিনেমা বানানো জনাব মালেক আফসারী সম্প্রতি এক ভিডিওবার্তায় বললেন, “সভা সেমিনার করে সিনেমা ইন্ড্রাস্ট্রি বাঁচে না। সিনেমা ইন্ড্রাস্ট্রি বাঁচে হিট সিনেমা তৈরি হলে।”
প্রায়ই অযৌক্তিক ধরনের কথাবার্তা বলা লোকটার এই কথাটি কিছুটা যুক্তিযুক্ত। যদিও পৃথিবীর যেসব দেশে সিনেমা নিয়ে চর্চা হয় অথবা তাহিতি দ্বীপপুঞ্জের কোন নাগরিক যদি কখনো সিনেমা নিয়ে পড়তে চায় তবে একবার অবশ্যই মালেকের স্ত্রী রোজী আফসারির নাম সে পড়বেই। কারণ সেই সভা সেমিনারের ছবি, ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ ঋত্বিক ঘটকের অনবদ্য এক নির্মাণ। তারপর সে যদি আগ্রহ হয় তাহলে রোজী আফসারীর অভিনীত চলচ্চিত্রের তালিকা থেকে মালেক সাহেবের ‘এই ঘর এই সংসার’ খুঁজে বের করতে পারে।
সে যাই হোক, মালেক সাহেব তার বক্তব্য অনুযায়ী হিট সিনেমা বানাতে চান, সংখ্যাগুরু দর্শকের জন্য কাজ করতে চান- তিনি কাজ করতে চান এটাই প্রশংসার। কিন্তু তিনি একটি ব্যাপার ধরতে পারছেন না। নব্বই দশকের তরুণ জনগোষ্ঠী এখন কিন্তু আর হলের দর্শকসারিতে, ডিসি বারান্দায় নেই। তারা এখন সংসারী, স্বামী বা পিতা। তাদের এখন ঢোলা প্যান্ট, ওমর সানির ধরনে লম্বা চুল, কায়দা করে বিড়ি ফুঁকার দিন নেই। এখন তাদের জায়গায় এসেছে তাদের ছেলে মেয়েরা। এদের মধ্যে শিক্ষার হার বেড়েছে। সমগ্র জনগোষ্ঠীতে তুলনামূলক দারিদ্র্যের হারও কমেছে। ২০১০ এর পর তো স্মার্টফোনের রমরমা চলছে। সবার হাতে হাতে মোবাইল। আর ২০১৩-২০১৪’র দিকে টু-জি ইন্টারনেট সংযোগ থেকে থ্রি-জিতে উত্তরণ ও কম খরচে ভাল গতি সম্পন্ন ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক বিস্তারের ফলে বিশ্বসংস্কৃতির দুয়ার যেন আরো খুলে গিয়েছে। ফেসবুকে খোলা শুরু হয় কোরিয়ান, পূর্ব-দক্ষিণ এশীয় ভিত্তিক সিনেমা দেখা গ্রুপ, দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমা দেখার গ্রুপ, সেইসব ইন্ড্রাস্ট্রির হিরোদের নিয়ে ফ্যান গ্রুপ, যেখানে আগে সবাই শুধু হলিউড আর বলিউড নিয়েই মেতে থাকতেন। সিনেমা হলগুলো থেকে সিনেপ্লেক্সের গ্রহনযোগ্যতা বাড়ছে। আর দর্শক টানতে তারা ‘একের সাথে আরেক’ ধরনের আকর্ষণীয় প্রস্তাবও দিচ্ছে।

২০০৯-১০ এর দিকে দৈনিক কালের কণ্ঠে চলচ্চিত্র সমালোচক দাউদ হোসাইন রনি যখন সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলাদেশি সিনেমার রিভিউ লিখতেন তখন বলতেন কোন দৃশ্য কোন নায়কের কোন সিনেমা থেকে কপি করা হয়েছে। এখন আর অত দেরি নেই। ট্রেইলার দেখেই দর্শক বলতে পারে হিন্দি ‘ভারত’ সিনেমাটি কোরিয়ান ‘ওড টু মাই ফাদার’ সিনেমার একটু অদলবদল কিংবা ‘পাসওয়ার্ড’ সিনেমাটি তেলেগু নায়ক মাঞ্চু বিষ্ণুর ‘ডিনামাইট’ এর ফটোকপি। মালেক সাহেব এই সচেতন দর্শককে বারবার উপেক্ষা করছেন। তেমনই উপেক্ষা করছেন বাংলাদেশের অন্য অনেক চলচ্চিত্রকারও।
একটি সহজ নমুনা উপস্থাপন করি। ভারতের কেরালা রাজ্যটি আমাদের থেকে অনেক দূরে। দক্ষিণ কোরিয়া তো বিমানে যেতে হয়। তাও সেখানকার কোন সিনেমার বাংলা সাবটাইটেল থাকলে যখন তা দুই তিন লক্ষবার ডাউনলোড হয় (subsceneডট কম থেকে) তখন আপনি কীভাবে কোন তৃতীয় স্তরের সিনেমাকে সাধারণ দর্শকের সিনেমা বলতে পারেন! এই তিন চার লাখ মানুষ স্রেফ বাংলা সাবটাইটেল দিয়ে সিনেমাটি দেখছে, ইংরেজি সাবটাইটেল সহ ধরলে তো দর্শক প্রায় দশ লাখ। এদের বাদ দিলে সাধারণ দর্শকের থাকে টা কী? এরা কেন একটি কপিপেস্ট করা সিনেমা দেখতে হলে যাবে? কেন টাকাটা খরচ করবে?
নির্মাণের যেসব সাধারণ ত্রুটি দর্শকের চোখে ধরা পড়ে তা নিয়ে একটু আলোচনা করা যাক।
একটা মানুষ ঘুম থেকে উঠলে তার চোখ থাকবে ফোলা, ঠোটের কোণ ভেজা থাকবে, গালে চাইলে চাদরের কুচকানোর ছাপও থাকতে পারে। সেখানে আমাদের সিনেমায় থাকে বাজে কালার গ্রেডিংয়ে আরো বাজে কৃত্রিম অভিব্যক্তি। অসহায় চরিত্রে অভিনয় করা নায়িকার থাকে অভিজাত শ্রেণীর মেয়েদের মত নাক, প্লাগ করা ভ্রু।

আবহ সঙ্গীতে যত্ন নেই, নেই সুর, তাল, দৃশ্যের মেজাজ বোঝার বোধ। আশির দশকের ব্লকবাস্টার ‘নয়নের আলো’ সিনেমায় স্রেফ মেজাজ ধরার জন্য সুবীর নন্দী, সত্য সাহারা মুখে চিবুনো পান নিয়ে গান গাওয়ার মত পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছিলেন। সেসব গান মুখে মুখে আর আবহ সঙ্গীত মনে তো বাজবেই। ওস্তাদ বড়ে গুলাম আলীকে বিকাশ রায় সারাদিন আটকে রাখার মতো দুঃসাহস দেখিয়েছিলেন কেবল চিত্রনাট্যের পরিবেশ অনুভব করাতে যেন তিনি এমন সঙ্গীত আয়োজন করেন যা বদ্ধ সিনেমা হলের দর্শকদের এক টানে নিয়ে যেতে পারে পর্দার ভেতরে কী হচ্ছে তাতে।
সচেতন লোক কেন সভা সেমিনার করবে না? এগুলো ঠিক করার কথা বলবেন না? আপনারা এসব গুরুত্ব দিয়ে না ভেবে বলে বেড়ান যে, আরে লোকে তো খাচ্ছে। কিন্তু লোকে খেলে ঈদের সময়ও প্রান্তিক হলগুলোয় ব্যবসা মার খেতো না। যারা ঈদের সময় হলে যান তারা নিশ্চয়ই দেখতে পান দর্শকের প্রতিক্রিয়া, ফাঁকা সিট- ভরা সিটের অনুপাত। যারা দেখতে এসেছে তারা কি সিনেমা দেখতে এসেছে নাকি অন্যকিছু? তাকে আপনি পর্দায় আটকে রাখতে পারছেন তো? সবদিকেই আমাদের নির্মাতা, নায়কেরা ব্যর্থ।
অতএব, সৌচিয়ে জনাব, আপ আইটি যুগ মে হ্যায়।
অন্যান্য চলচ্চিত্র ইন্ড্রাস্ট্রি কিন্তু এই বেড়ে ওঠা মধ্যবিত্ত দর্শকের সাথে তাল মেলাচ্ছে। সিনেমাগুলোতে নায়ক চরিত্রটির পেশা নিয়ে আমরা আলোচনাটা করা যেতে পারে।

আমাদের বাণিজ্যিক সিনেমায় নায়কদের পেশা থাকে যত সব অসুস্থ প্রকৃতির জিনিস। পেশা-গুলোকে অসুস্থ বলছি না, বলছি তাদের উপস্থাপনকে।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে নায়কটি থাকেন ছাত্র। অলীক উপায়ে প্রথম হন, নবীনবরণে গান গেয়ে যান, প্রেম করেন। তারপর এগিয়ে আছে পুলিশ। ঢাকা অ্যাটাক ছাড়া কোথাও পুলিশ হতে গেলে যে সারদা একাডেমীর ভয়ানক ট্রেনিং লাগে তার উল্লেখ নেই। ক্ষতিপূরণ- সিনেমায় আলমগীর চিত্রশিল্পী ছিলেন, হঠাৎ বৃষ্টি-তে ফেরদৌস চাকরিজীবী… কারণ ছবিগুলো মালয়লাম ও তামিল সিনেমা থেকে কপি করা, সেখানেও নায়কের পেশা এগুলো ছিল। এরপর আছে শক্তিমান কুলি, সিএনজি চালক, ট্যাক্সি চালক, গ্যারেজ মেকানিক এসব। ঢাকা-৮৬ সিনেমায় যা-ও একটু ‘কেন ট্যাক্সি চালক?’ তা বলেছিল, বাকিগুলোতে তেমন কোন বালাই নেই। আর নায়িকাকে উত্যক্ত করতে করতে প্রেম হয়ে যাবার মত বাজে জিনিসের সমর্থন তো আছেই। এবং সেটি স্বয়ং সালমান শাহের সিনেমাতেও রয়েছে। নায়িকাদের পেশা তো দুখানা বই আর চড়া মেকাপ নিয়ে কলেজ যাওয়া আর ধাক্কা খাওয়া এং গ্রামের গৃহবধূ।
তো যখন দেশের একটি বড় গোষ্ঠী এসব দেখে আর বিশ্বাস করতে পছন্দ করে যে “এভাবেও তো বেঁচে থাকা যায়” তখন ব্যাপারটি পরোক্ষভাবে মনের উন্নয়নে, উদ্দীপনে, রুচিতে একটা প্রভাব রাখেই। আবার আরেক গোষ্ঠী যখন এসবে নিজেকে খুঁজে পায় না তখন বলতেই পারে, “কচুর বাংলা সিনেমা কেউ দেখে নাকি?” আসলে এখন এই দ্বিতীয় দলটির আকারই বড় হচ্ছে দিন দিন। আপনি যতই বলেন দেশে বেকার সমস্যা আছে, কিন্তু বিকল্প পেশা বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৯৯৮ সালেই শ্রমবাজারে নারী পুরুষের অংশগ্রহন যৌথভাবে ৭৬% ছিল। আর সর্বশেষ দেশের ৪৫ মিলিয়ন তরুণের মধ্যে ১১.৬ মিলিয়ন কেবল বেকার দশায় আছে, বাকিরা কিছু না কিছু করে অর্থনীতিতে অংশ নিচ্ছে। তাদের পেশাগুলো গল্প-সিনেমায় কই? আনছেন না কেন ওসব?
ভারতের একটি ইন্ড্রাস্ট্রির বাণিজ্যিক সিনেমার কথাই ধরা যাক, মলিউড, কেরালা রাজ্যের মালয়লাম ভাষার সিনে ইন্ড্রাস্ট্রি।

সেখানকার কিছু সুপারস্টার নায়কের ক্যারিয়ারের সেরা কিছু সিনেমায় তাদের পেশা:
পৃথ্বীরাজ সুকুমারন: ব্যর্থ ব্যবসায়ী, অতীতে বামপন্থী নেতা (ক্লাসমেটস), শপিং মলে শিশু কর্ণারের কর্মচারী (অমর আকবর অ্যান্টনি), দুবাইয়ের তেলের খনিতে ময়লা পরিষ্কার করা শ্রমিক, স্থানীয় স্কুলের ক্রীড়া শিক্ষক (কুডে), নৌবাহিনীর ডিমোশন প্রাপ্ত অফিসার, শরীরচর্চা ইন্সট্রাক্টর (আনারকলি), চিকিৎসক (আঞ্জুমন আয়ান থামিল)।
ফাহাদ ফাসিল: নার্স (নুজান প্রকাশন), ছবি তোলা ও এডিটিংয়ের দোকান (মহেশান্তে প্রতিকারাম), ট্রাভেল এজেন্ট (২২ ফিমেল কোট্টাম), চাকরিজীবী (বেঙ্গালোর ডে’জ)।
নিভিন পাউলি: ওয়েটার (আরকিল ওরাল), বেকারি দোকানদার (প্রেমাম), ব্যবসায়ী (আনন্দম), অফিসের চতুর্থ উর্ধ্বতন কর্মকর্তা (ইভিদে)- বস না কিন্তু যেটা ঢাকাই সিনেমাতে দেখায়, বিদেশে ফেল করে বহিষ্কৃত হওয়া ছাত্র (ওরিদাভেলা), চাষ-বাস, খামারি (ওম শান্তি ওশানা)
এছাড়া নিভিন যেগুলোতে সিনেমার সিংহভাগ জুড়ে বেকার ও ফাজলামি করে গেছেন সবগুলোতেই তার চরিত্র ঠাট্টার পাত্র হবার মত রিঅ্যাকশন তৈরি করেছে দর্শকদের মাঝে (ওরু ভাড়াক্কান সেলফি, নীরাম, চ্যাপ্টারস)।
দুলকার সালমান: বাবুর্চি (উস্তাদ হোটেল), বডিগার্ড টিমের একজন সদস্য (কামাট্টিপারাম), চাকরিজীবী (কালি), বাইক রেসার (বেঙ্গালোর ডে’জ)।
দুলকার বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ছাত্র থাকেন, সেখানেও তার ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড ধনী দেখানো হয়। বিক্রমাদিত্য-তে তিনি গরীব পরিবারের বড় ছেলে ছিলেন আর পুলিশ হতে ভর্তি পরীক্ষা, প্রশিক্ষণ এসবের ভেতর দিয়ে যান। তাও একেবারেই এসপি বা ওসি না। সাব ইন্সপেক্টর হয়েছিলেন।

এখন আপনি যদি এসব নায়কদের পাঁড় ভক্ত হন বা ক্রমাগত আপনাকে এসবই দেখানো হয় তবে আপনার মধ্যেও একরকম ইতিবাচকতা আসতে বাধ্য। আপনিও এমনটা হতে চাইবেন। আপনি বাউণ্ডুলে হতে গেলে মনে পড়বে, আরে ঐ সিনেমাতে নিভিনের পরিণতি কী হয়েছিল বা আপনি পুলিশ হতে চাইলে স্রেফ গুন্ডা পেটানোর অলীকতা না, পুলিশের নিত্যকার রুটি আলুভাজির সাথেও পরিচিত থাকবেন।
আবার আপনি যদি ইতোমধ্যে এসব অর্জন করে থাকেন তো আপনি সহজেই গল্পের সাথে নিজেকে সংযুক্ত করে ফেলতে পারবেন। দেখে আনন্দ পাবেন এবং আরো দশজনকে দেখাবেন। ঠিক সেজন্যই এই সিনেমাগুলো কম বাজেটে করেও এত হিট, এত দিন ধরে চলেছে। যদি মলিউড এখনো সেই ‘আইয়াম্মা ইল্লে’ টাইপ সিনেমায় আটকে থাকতো তাহলে তার পাশের-ই কর্ণাটক ইন্ড্রাস্ট্রির মত মেগাহিট হতো এক দুটো সিনেমা, বাকিগুলো কোনমতে অ্যাভারেজ পেরুতো, বেশিরভাগ থাকতো ফ্লপ। কিন্তু তারা মানুষের সংখ্যা ও সামাজিক অবয়বের পরিবর্তনটা ধরতে পেরেছে। তাই কলেজে যে ছেলেটা গীটার বাজায় কেবল সে-ই গান গাইতে পারে, তার বন্ধু মাচো নায়কটি না। আবার হাতের বাইসেপ কম থাকা নায়ক ঝেড়ে দৌড় দেয় বখাটে, সন্ত্রাসীদের থেকে বাঁচতে। আপনাকে তারা ‘শান্তি’ দেয় না। আপনার ভেতরে ক্ষোভ জিইয়ে রাখে। আপনি সিনেমা শেষ হবার বহুক্ষণ পর রাতে বিছানায় শুয়ে বা পরদিন সকালে দাঁতে ব্রাশ ঘষতে ঘষতে ভাবতে থাকেন, কেন দুলকার গুন্ডাটির কাছ থেকে পালালো। ও কি দুলকার নাকি সে নিজেই! — এই যে এই ব্যাপারটি কিন্তু মলিউড করাচ্ছে, আপনাকে সংযুক্ত করা। আপনি গ্ল্যামারাস অভিনেতা, কমিক ট্রেইলার দেখে সিনেমা দেখতে গিয়ে আটকা পড়লেন। এটাই ওদের স্ট্র্যাটেজি।

যাহোক, আশার কথা হচ্ছে সিনেমা নির্মাণে আফসারীদের সংখ্যা কমতির দিকে। মারামারি বিহীন একটি সিনেমা হয়ে গেল ‘যদি একদিন’। ওটার চেয়ে আরো ভাল নির্মাণ হবে সামনে আশা করি। পাঠশালা, শর্ট ফিল্ম ফোরাম, মুভিয়ানা, রেইনবো- এসবের কর্মশালা, এপ্রেসিয়েশন কোর্সে লোক বাড়ছে। মাথায় সিনেমা বানানোর পোকা ঢুকছে। কেরালার মতো পরিবর্তনটা হয়তো পাঁচ বছর নয় বিশ বছর পর হলেও আসবেই। সভা সেমিনার থেকে ক্রমে তা ছড়াবে হলে, মাল্টিপ্লেক্সে।
Feature Image Courtesy: emaze.com